২০১৮ সালে দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৭২২১ জন!
২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় সাত হাজার ২২১ জন মানুষ মারা গেছেন বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি। সংগঠনটি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, গত বছর সারা দেশে পাঁচ হাজার ৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যান সমিতির বার্ষিক সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন-২০১৮ তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৮ সালে রেলপথে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৭০টি। এতে প্রাণ হারান ৩৯৪ জন, আহত হন ২৪৮ জন। নৌপথে মোট ১৫৯ দুর্ঘটনা ঘটে, এতে মারা যান ১২৬ জন, আহত হন ২৩৪ জন। দেশব্যাপী এসব দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন ৩৮৭ জন। অন্যদিকে ২০১৮ সালে আকাশপথে পাঁচটি দুর্ঘটনায় নিহত হন ৫৫ জন, আহত হন ৩২ জন।
বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির এই বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের সময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, জিটিভি ও সারাবাংলা ডটনেটের এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ আবদুল হক, সাংবাদিক নেতা কুদ্দুস আফ্রাদ, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়াসহ সংশ্লিষ্ট আরো অনেকে।
কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, 'সড়কে আইনের শাসনের প্রয়োগ দেখতে পাই না। আইন প্রণেতারাও আইন মেনে চলছেন না। এখনও উল্টা পথে ভিআইপিদের গাড়ি দেখা যায়। আরেকটি সমস্যা হচ্ছে- দুর্ঘটনায় আহত বা নিহতের পরিবারকে অনেক সময় কোন ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করা হয় না।'
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যান সমিতি সড়ক দুর্ঘটনারোধে ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরেন। সেগুলো হলো- ট্রাফিক আইন, মোটরযান আইন ও সড়ক ব্যবহার বিধিবিধান সম্পর্কে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির, গির্জায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা। টিভি চ্যানেল ও সংবাদপত্রগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা। জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের পাস থেকে হাটবাজার অপসারণ করা, ফুটপাত দখলমুক্ত করা।
এছাড়াও থাকছে রোড সাইন (ট্রাফিক চিহ্ন) স্থাপন করা, জেব্রাক্রসিং অংকন করা, গণপরিবহন চালকদের প্রফেশনাল ট্রেনিং ও নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, যাত্রী ও পথচারীবান্ধব সড়ক পরিবহন বিধি প্রণয়ন, গাড়ির ফিটনেস ও চালদের লাইসেন্স দেয়ার পদ্ধতি উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তালমিলিয়ে আধুনিকায়ন করা, জাতীয় মহাসড়কে স্বল্পগতি ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা, অনুমোদিত সড়ক পরিবহন আইন দ্রুত বাস্তবায়ন করা, সড়ক নিরাপত্তা তহবিল গঠন করে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের চিকিৎসা ও পনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নকালে চালকের ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা ও পর্যাপ্ত মানসম্মত গণপরিবহন নামানোর উদ্যোগ নেয়া।
Comments