সিলেটে মেয়েকে ধর্ষণ করলো বাবা, গ্রেপ্তারের পর স্বীকারোক্তি

সিলেটে মেয়েকে ধর্ষণ করলো বাবা, গ্রেপ্তারের পর স্বীকারোক্তি


মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

  •  প্রকাশিত ০৩:৪৭ বিকেল জুলাই ২৪, ২০১৯
গাজীপুর ধর্ষক
ছবি: ঢাকা ট্রিবিউন

নির্যাতিতা কিশোরীর নিকটাত্মীয় কেউ না থাকায় প্রতিবেশী এক নারী মামলাটি করেন
গাজীপুরের টঙ্গীতে নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ ও অন্তঃসত্ত্বা করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ধর্ষক আইনাল মিয়াকে (৩৯) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে রায়ে আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) মেছবাহ উদ্দিন আহমেদ এই রায় দেন।
গাজীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাহজাহান জানান, গাজীপুরের টঙ্গীর এরশাদ নগর (তালতলা) এলাকায় স্ত্রী ও তিন মেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন আইনাল। প্রথম স্ত্রী বানু বেগম মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীও আইনালকে ছেড়ে চলে যান। ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল মধ্যরাতে আইনাল তার বড় মেয়েকে ধর্ষণ করেন। একসময় ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। সাড়ে ৫ মাস পর তার শারীরিক গঠনে পরিবর্তনের বিষয়টি প্রতিবেশীদের নজরে এলে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে নির্যাতিতা স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে ঘটনার বিস্তারিত জানায়।
ওই কিশোরীর নিকটাত্মীয় কেউ না থাকায় প্রতিবেশী রেখা বেগম ২০১৫ সালের ৩১ আগস্ট বাদী হয়ে ধর্ষক বাবা আইনাল মিয়াকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে টঙ্গী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনা জানাজানির পর ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচির মো. মনির হোসেন নির্যাতিতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং লিগ্যাল কাউন্সেলিং করেন। তাকে মামলায় সহযোগিতা করার জন্য ব্র্যাকের প্যানেল আইনজীবী নাদিরা বেগমকে নিয়োগ দেন। তিনি ক্লায়েন্টকে কাউন্সেলিং করার মাধ্যমে সাহসী করে তোলেন এবং পি.পি-কে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর আইনাল মিয়াকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২ মার্চ চার্জ গঠন করা হয়। ধর্ষণের শিকার কিশোরী আদালতে জবানবন্দি দেয়।
৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) মেছবাহ উদ্দিন আহমেদ এ রায় দেন। এসময় মামলার আসামি আইনাল মিয়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে গাজীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)  শাহজাহান এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী জাকির উদ্দিন মামলা পরিচালনা করেন।

মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় বাবা গ্রেপ্তার






প্রতীকী ছবিপ্রতীকী ছবিরাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় মেয়েকে (১৩) ধর্ষণের অভিযোগে বাবার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে শিশুটির মা পাংশা এ থানায় মামলা করেছেন। এর আগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মারধর করে পুলিশে দেন স্থানীয় লোকজন।

শিশুটির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশুটি তার আরও এক বোনসহ দাদা-দাদির সঙ্গে থাকে। একমাত্র ভাই তার মা-বাবার সঙ্গে কুষ্টিয়ায় থাকে। বাবা একটি হোটেলে ও মা গৃহপরিচারিকার কাজ করেন। শিশুটির বাবা তাঁর দুই মেয়েকে দেখভালের জন্য প্রায়ই পাংশায় আসেন। মেয়েদের দেখভালের জন্য গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাবা গ্রামের বাড়িতে আসেন। শুক্রবার সকালে বাড়িতে শিশুটি ঘর গোছানোর কাজ করছিল। এ সময় বাবা শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। শিশুটির চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। এ সময় শিশুটির বাবা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাঁকে আটক করে শিশুটির মাকে খবর দেওয়া হয়। পরে শিশুটির মা বাড়িতে এলে স্থানীয় লোকজন শিশুটির বাবাকে মারধরের পর পুলিশে খবর দেন। ওই ব্যক্তি বর্তমানে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
শিশুটির মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী অনেক দিন ধরে এই খারাপ কাজ করে আসছিল। আমরা বিষয়টি কখনো চিন্তাও করি নাই। কিন্তু মেয়েটি লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলেনি। এ ঘটনার পরে আমার কাছে সে সবকিছু বলেছে।’
পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটির বাবাকে পুলিশের পাহারায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। থানায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আগামী রোববার বয়স নির্ধারণ ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শিশুটিকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।

Comments