কুষ্টিয়ার বিক্ষাৎ বিক্ষাৎ গুনি ব্যাক্তি গণ


বাউল সম্রাট লালন শাহ


এর
জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে যথেষ্ট মতান্তর রয়েছে তার জাতি ধর্ম বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য পাওয়া যায় না প্রবাদ আছে যে তার জন্ম হিন্দু কায়স্থ পরিবারে কোন এক সময় তিনি এক বাউল দলের সঙ্গী হয়ে গঙ্গাস্নানে যান পথিমধ্যে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গীরা তাকে নদীর তীরে ফেলে যান সিরাজ শাহ নামক এক মুসলমান বাউল তাকে কুড়িয়ে সেবা করে সুস্থ করে তোলেন সিরাজ শাহর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে তিনি মরমিসাধনায় আত্মনিয়োগ করেন সিরাজ শাহর মৃত্যু হলে তিনি কুষ্টিয়ার ছেউঁড়িয়ায় আখড়া স্থাপন করে সেখানে তাঁর প্রতিভার বিকাশ ঘটান নিজ সাধনায় তিনি হিন্দু-মুসলমান শাস্ত্র সর্ম্পকে বিশেষ বুৎপত্তি অর্জন করে বাউল সঙ্গীতে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেন তাঁর গান আধ্যাত্মিক, মরমি শিল্পগুণে সমৃদ্ধ তাঁর রচিত গানের সংখ্যা সহস্রাধিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সর্বপ্রথম লালনের ২৯৮টি গান সংগ্রহ করে ২০টি গান তৎকালীন ‘‘প্রবাসী’’ প্রত্রিকায় প্রকাশ করেন তাঁর খাচার ভিতর অচিন পাখী, বাড়ির পাশে আরশি নগর, মিলন হবে কত দিনে আমার মনের মানুষের সনে, আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে ইত্যাদি গান বাউলতত্ত্ব বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ ১২৯৭ বঙ্গাব্দের কার্তিক ছেউঁড়িয়ায় তিনি দেহত্যাগ করেন

মীর মশাররফ হোসেন

১৮৪৭ সালে কুমারখালীর লাহিনী পাড়ায় জন্ম তার পিতা ছিলেন জমিদার মীর মোয়াজ্জেম হোসেন মাতা ছিলেন দৌলতন নেছা বাঙালী মুসলমানদের মধ্যে তিনিই প্রথম একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন যার নাম ছিল ‘‘আজিজুননেহার’’ (১৮৭৪-৭৬) তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য পত্রিকা ছিলহিতকরী’’ তিনি অসংখ্য গ্রন্থ রচনা করেন এবং এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিষাদসিন্ধু, জমিদার দর্পণ, উদাসীন পথিকের মনের কথা, গাজী মিয়ার বস্তানী, রত্নবতী, বসন্ত কুমারী, গোজীবন, আমার জীবনী, সংগীত লহরী ইত্যাদী তাঁর স্মৃতিধন্য বাস্ত্তভিটায় তোরণ, কিছু ফলক, বিদ্যালয় লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে


কাঙাল হরিনাথ মজুমদার

কুমারখালীর কুন্ডুপাড়া গ্রামে জন্ম তিনি সমাজবিপ্লবী-সাময়িক পত্রসেবী হিসেবে পরিচিত তার পরিচালিত গ্রামবার্তা প্রকাশিকা (১৮৬৩-৮৫) সমকালে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ব্রহ্মান্ড দেব, ফিকির চাঁদের গীতাবলী, বিজয় বসন্ত উল্লেখযোগ্য তার প্রতিষ্ঠিত এম এন (মথুরানাথ এর নামে) প্রেসে মীর মশাররফ হোসেনের বিষাদ সিন্ধু গ্রন্থটি ছাপানো হয় গ্রামবার্তা পত্রিকাটিও এখান থেকে প্রকাশিত হতো প্রেসটির ধ্বংসাবশেষ এখনো পর্যটকদের আকর্ষণ করে


বাঘা যতীন



যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (বাঘা যতীন) ( ডিসেম্বর, ১৮৭৯ - ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯১৫) ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী নেতা বাঘা যতীনের জন্ম হয় কুষ্টিয়া জেলার কয়া গ্রামে তাঁর পিতার নাম উমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মাতার নাম শরৎশশী যতীন শৈশব থেকেই শারীরিক শক্তির জন্য বিখ্যাত ছিলেন শুধুমাত্র একটি ছোরা নিয়ে তিনি একাই একটি বাঘকে হত্যা করতে সক্ষম হন বলে তাঁর নাম রটে যায় বাঘা যতীন


মোহিনী মোহন

কুমারখালীর এলঙ্গী গ্রামে জন্ম ১৯০৮ সালে পূর্ববঙ্গের প্রাচীনতম কাপড়ের মিল মোহিনী মিলস্ এর প্রতিষ্ঠাতা


রাধা বিনোদ পাল


১৮৯৬ সালে দৌলতপুর উপজেলার সেলিমপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন এছাড়া তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক সামরিক আদালতের প্রধান বিচারক হিসেবে বিচার কার্য পরিচালনা করেছিলেন অন্যান্য দেশের বিচারকরা যখন জাপানকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে, তিনি তখন জাপানকে যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে নির্দোষ প্রমাণ করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন জাপানে কিয়োটো শহরে তার নামে একটি যাদুঘর রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে

Comments