সংবিধান সংশোধন করে বিসমিল্লাহ বাদ দিতে হবে: শাহরিয়ার কবির
![]() |
শাহরিয়ার কবির |
মঙ্গলবার সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়া ১৯ জনের অধিকাংশই একই ধরনের মত দেন।
সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সংসদ ভবনে বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বিশেষ কমিটির এ বৈঠককে রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে একটি বিরাট পরিবর্তন বলে মন্তব্য করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল।
“সংবিধান সংশোধনের মতো সবার মতামত নেওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের সূচনা হলো। রাজনীতিকরা (এতোদিন) নিজেদের বাইরে গিয়ে আর কাউকে ডেকে নিয়ে (সংবিধান সংশোধন) সম্পৃক্ত করেননি। এবার তা হলো।”
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জানান, সংবিধান সংশোধনে মতামত দেওয়ার জন্য আলোচ্য বিষয় (টকিং পয়েন্ট) ছিল- বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রর্ধর্ম, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বিচার বিভাগ, ও সংবিধানের সার্বভৌমত্ব।

এছাড়া স্ব স্ব ক্ষেত্রের বাইরে বিশিষ্টজনেরা নারী আসন, আদিবাসী, নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রভাষা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারাসাম্যসহ নানা বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন বলে জানান তিনি।

আমন্ত্রিতদের অনেকেই জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি, বিচারবহির্ভুত শাস্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানের শুরুতে রাখা, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সংবিধানে যুক্ত করা, স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি বন্ধে শাস্তির বিধান রাখা, অবৈধ ক্ষমতাদখল ও সংবধিনের মূলনীতি পরিবর্তন শাস্তিযোগ্য অ’পরাধ হিসাবে গণ্য করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে এই বৈঠকে।

বিশেষ কমিটির সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, “বৈঠকে সবাই খোলামেলা আলোচনা করেছেন। বিশেষ কমিটি তাদের মতামত শুনেছে। কমিটি সম্পাদকদের মতামত নেবে বুধবার। পরে পর্যালোচনা করে খসড়াপ্রস্তাব করা হবে।”

AliExpress.com Product - Ellolace Summer Lace Bodysuit Women Floral Embroidery Deep V Neck Sexy Bodysuit Dot Patchwork Jumpsuit Overalls 2019 Femlae Body
চার মূলনীতি ও তিনটি বিষয়
বৈঠক শেষে জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৭২ এর সংবিধানের চার মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তিনি। এক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিশেষ কমিটির বৈঠকে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও ধর্মের অ’পব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দিয়েছেন বলেও জানান কবীর চৌধুরী।
তিনি জানান, বিশেষ কমিটির বৈঠকে আমন্ত্রিত একজন ছাড়া বাকি সবাই তার মতোই প্রস্তাব দিয়েছেন।
লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, দুই জেনারেল (জিয়াউর রহমান ও এইচএম এরশাদ) সম্পূর্ণ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সংবিধানে বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

AliExpress.com Product - Women New Spring Pu Leather Sashes a Line Mini Dress Ladies Short Sleeve Turn Down Collar Fashion Party Club Dress Autumn
তিনি বলেন, “এটা ছিল তাদের মতলবি কাজ। ইসলামপ্রীতি বা জনস্বার্থে তারা তা করেননি। রাষ্ট্রীয় দলিলে বিসমিল্লাহর দরকার নেই। এক্ষেত্রে আদি সংবিধানে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি আমরা।”
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদের নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির জানান, তিনি বলেছেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা এবং চার মূলনীতি (জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা) কোনো অবস্থায় পরিবর্তন করা যাবে না। সংবিধানের মূলনীতি পরিপন্থী কোনো আইন প্রণয়ণ করা যাবে না।

AliExpress.com Product - SUCHCUTE Women's Hoodies Neon Green Casual Lose Weight Hoody Top Sudadera Mujer Kpop O-Neck Autumn 2019 Female Gothic Sweatshirt
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল জানান, রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিরুদ্ধে যায়। দেশের মূল ধারণার সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক। ধর্ম দিয়ে কারো উপকার হতে পারে, তা নিজস্ব বিশ্বাস। ধর্মকে ব্যবহার করে কাউকে আঘাত বা অত্যাচার করা, অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণার উদ্রেক করা এবং ধর্মের অপব্যবহার করা চলবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান, সিপিডির দ্রেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সৈয়দ আবুল মকসুদ, মুনতাসীর মামুন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সাংবাদিক এ বিএম মুসা ও অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম জানান- এ তিনটি বিষয়ে তারা একই মত দিয়েছেন।
একমাত্র বিরোধিতা সাবেক উপদেষ্টার
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, একমাত্র তিনিই সবার মতের বিরুদ্ধে প্রস্তাব রেখেছেন সংবিধান সংশোধন কমিটির কাছে।
তিনি বলেন, “ওই তিনটি বিষয়ে আমি তাদের সঙ্গে (বিশেষ কমিটির আমন্ত্রিত) একমত। বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এগুলোর বিরুদ্ধে (বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মভিত্তিক দল) বলেছিও। কিন্তু বৈঠকে এবার জানিয়েছি, এখন সংশোধনীতে এসব বাদ দিলে নতুন করে গণ্ডগোল লাগবে, অরাজক পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।”
‘বাস্তবতা’ বিবেচনায় বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মভিত্তিক দলের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান সাবেক এই উপদেষ্টা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল শুধু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্মের বিধান ও বিসমিল্লাহ থাকতে পারে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ধর্মভিত্তিক দল থাকবে। কিন্তু তারা যাতে ধর্মকে অপব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ নির্ধারণ করে দেওয়ার প্রস্তাব রেখে আকবর আলি খান বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। কোনোভাবেই এ সরকারের বাজেট প্রণয়ন করতে দেওয়া যাবে না।
বিচারপতিদের অভিসংশন করার পক্ষেও মত দেন তিনি। এছাড়া আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য (২০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন ও ২০০ আসনে ভোটের সংখ্যার আধিক্যের দিকটি বিবেচনা করে সংসদ সদস্য নির্বাচন) নির্বাচন এবং ইসিকে শক্তিশালী করার বিষয়ে প্রস্তাব রাখেন আকবর আলি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রস্তাব রাখেন, ৯০ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন আনুষ্ঠানে ব্যর্থ হলে পুরনো সংসদ কার্যকর হবে এবং সংসদের অধীনেই নির্বাচন হবে।
বদিউল আলম মজুমদার তার প্রস্তাবে বলেছেন, বিচারপতিদের একটি প্যানেলের মধ্য থেকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ও আপীল বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ওই প্যানেল করতে হবে। সেখানে নিজেদের মধ্যে নির্বাচন হবে। যিনি জয়ী হবেন তিনিই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন।
সকাল ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সংসদ ভবনে বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বিশেষ কমিটির এ বৈঠককে রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে একটি বিরাট পরিবর্তন বলে মন্তব্য করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল।
“সংবিধান সংশোধনের মতো সবার মতামত নেওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের সূচনা হলো। রাজনীতিকরা (এতোদিন) নিজেদের বাইরে গিয়ে আর কাউকে ডেকে নিয়ে (সংবিধান সংশোধন) সম্পৃক্ত করেননি। এবার তা হলো।”
ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জানান, সংবিধান সংশোধনে মতামত দেওয়ার জন্য আলোচ্য বিষয় (টকিং পয়েন্ট) ছিল- বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রর্ধর্ম, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বিচার বিভাগ, ও সংবিধানের সার্বভৌমত্ব।

এছাড়া স্ব স্ব ক্ষেত্রের বাইরে বিশিষ্টজনেরা নারী আসন, আদিবাসী, নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রভাষা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারাসাম্যসহ নানা বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন বলে জানান তিনি।

আমন্ত্রিতদের অনেকেই জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি, বিচারবহির্ভুত শাস্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানের শুরুতে রাখা, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ সংবিধানে যুক্ত করা, স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি বন্ধে শাস্তির বিধান রাখা, অবৈধ ক্ষমতাদখল ও সংবধিনের মূলনীতি পরিবর্তন শাস্তিযোগ্য অ’পরাধ হিসাবে গণ্য করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে এই বৈঠকে।


বিশেষ কমিটির সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, “বৈঠকে সবাই খোলামেলা আলোচনা করেছেন। বিশেষ কমিটি তাদের মতামত শুনেছে। কমিটি সম্পাদকদের মতামত নেবে বুধবার। পরে পর্যালোচনা করে খসড়াপ্রস্তাব করা হবে।”

AliExpress.com Product - Ellolace Summer Lace Bodysuit Women Floral Embroidery Deep V Neck Sexy Bodysuit Dot Patchwork Jumpsuit Overalls 2019 Femlae Body
চার মূলনীতি ও তিনটি বিষয়
বৈঠক শেষে জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৭২ এর সংবিধানের চার মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তিনি। এক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিশেষ কমিটির বৈঠকে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ও ধর্মের অ’পব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত দিয়েছেন বলেও জানান কবীর চৌধুরী।
তিনি জানান, বিশেষ কমিটির বৈঠকে আমন্ত্রিত একজন ছাড়া বাকি সবাই তার মতোই প্রস্তাব দিয়েছেন।
লেখক সৈয়দ শামসুল হক বলেন, দুই জেনারেল (জিয়াউর রহমান ও এইচএম এরশাদ) সম্পূর্ণ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সংবিধানে বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

AliExpress.com Product - Women New Spring Pu Leather Sashes a Line Mini Dress Ladies Short Sleeve Turn Down Collar Fashion Party Club Dress Autumn
তিনি বলেন, “এটা ছিল তাদের মতলবি কাজ। ইসলামপ্রীতি বা জনস্বার্থে তারা তা করেননি। রাষ্ট্রীয় দলিলে বিসমিল্লাহর দরকার নেই। এক্ষেত্রে আদি সংবিধানে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি আমরা।”
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদের নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির জানান, তিনি বলেছেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা এবং চার মূলনীতি (জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা) কোনো অবস্থায় পরিবর্তন করা যাবে না। সংবিধানের মূলনীতি পরিপন্থী কোনো আইন প্রণয়ণ করা যাবে না।

AliExpress.com Product - SUCHCUTE Women's Hoodies Neon Green Casual Lose Weight Hoody Top Sudadera Mujer Kpop O-Neck Autumn 2019 Female Gothic Sweatshirt
মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল জানান, রাষ্ট্রধর্ম ও বিসমিল্লাহ দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের বিরুদ্ধে যায়। দেশের মূল ধারণার সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক। ধর্ম দিয়ে কারো উপকার হতে পারে, তা নিজস্ব বিশ্বাস। ধর্মকে ব্যবহার করে কাউকে আঘাত বা অত্যাচার করা, অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণার উদ্রেক করা এবং ধর্মের অপব্যবহার করা চলবে না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান, সিপিডির দ্রেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সৈয়দ আবুল মকসুদ, মুনতাসীর মামুন, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সাংবাদিক এ বিএম মুসা ও অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম জানান- এ তিনটি বিষয়ে তারা একই মত দিয়েছেন।
একমাত্র বিরোধিতা সাবেক উপদেষ্টার
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, একমাত্র তিনিই সবার মতের বিরুদ্ধে প্রস্তাব রেখেছেন সংবিধান সংশোধন কমিটির কাছে।
তিনি বলেন, “ওই তিনটি বিষয়ে আমি তাদের সঙ্গে (বিশেষ কমিটির আমন্ত্রিত) একমত। বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এগুলোর বিরুদ্ধে (বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মভিত্তিক দল) বলেছিও। কিন্তু বৈঠকে এবার জানিয়েছি, এখন সংশোধনীতে এসব বাদ দিলে নতুন করে গণ্ডগোল লাগবে, অরাজক পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।”
‘বাস্তবতা’ বিবেচনায় বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মভিত্তিক দলের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন বলে জানান সাবেক এই উপদেষ্টা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল শুধু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্মের বিধান ও বিসমিল্লাহ থাকতে পারে না। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও ধর্মভিত্তিক দল থাকবে। কিন্তু তারা যাতে ধর্মকে অপব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ নির্ধারণ করে দেওয়ার প্রস্তাব রেখে আকবর আলি খান বলেন, ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। কোনোভাবেই এ সরকারের বাজেট প্রণয়ন করতে দেওয়া যাবে না।
বিচারপতিদের অভিসংশন করার পক্ষেও মত দেন তিনি। এছাড়া আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য (২০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন ও ২০০ আসনে ভোটের সংখ্যার আধিক্যের দিকটি বিবেচনা করে সংসদ সদস্য নির্বাচন) নির্বাচন এবং ইসিকে শক্তিশালী করার বিষয়ে প্রস্তাব রাখেন আকবর আলি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক প্রস্তাব রাখেন, ৯০ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন আনুষ্ঠানে ব্যর্থ হলে পুরনো সংসদ কার্যকর হবে এবং সংসদের অধীনেই নির্বাচন হবে।
বদিউল আলম মজুমদার তার প্রস্তাবে বলেছেন, বিচারপতিদের একটি প্যানেলের মধ্য থেকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি ও আপীল বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ওই প্যানেল করতে হবে। সেখানে নিজেদের মধ্যে নির্বাচন হবে। যিনি জয়ী হবেন তিনিই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন।
তবে আরও দুই মেয়াদ পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বিলুপ্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে ব্যর্থ হলে পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে-এটা বাস্তবিক নয় বলে মন্তব্য করেন এবিএম মুসা।
তিনি বলেন, “আমার মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদ না করে দিয়ে পরবর্তী সরকার গঠন হওয়া পর্যন্ত মেয়াদ করা উচিত। সেটা ৯০ দিনের কম-বেশি হতে পারে।”
‘প্রধান উপদেষ্টাকে নিরপেক্ষ করতে হবে’
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান এখইন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি তুলে না দিয়ে আগের দুই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিবেচনায় নিয়ে পদ্ধতিতে সংস্কার আনার প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, “সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ লোককে হতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান। এমন ব্যক্তিদের নিযুক্ত করা উচিত যারা নির্দলীয় না হলেও যেন নিরপেক্ষ হন। এতে করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোন বিতর্ক উঠবে না।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে ব্যর্থ হলে পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে-এটা বাস্তবিক নয় বলে মন্তব্য করেন এবিএম মুসা।
তিনি বলেন, “আমার মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদ না করে দিয়ে পরবর্তী সরকার গঠন হওয়া পর্যন্ত মেয়াদ করা উচিত। সেটা ৯০ দিনের কম-বেশি হতে পারে।”
‘প্রধান উপদেষ্টাকে নিরপেক্ষ করতে হবে’
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান এখইন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি তুলে না দিয়ে আগের দুই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিবেচনায় নিয়ে পদ্ধতিতে সংস্কার আনার প্রস্তাব করেন।
তিনি বলেন, “সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ লোককে হতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান। এমন ব্যক্তিদের নিযুক্ত করা উচিত যারা নির্দলীয় না হলেও যেন নিরপেক্ষ হন। এতে করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোন বিতর্ক উঠবে না।”
সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান ৭০ অনুচ্ছেদে সংশোধনী আনারও প্রস্তাব দেন তিনি।
বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এসেছে জানিয়ে সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, “গতবার ইয়াজউদ্দিন সাহেব যেমন নিয়ম লঙ্ঘন করে একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার হয়েছেন, এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়। প্রধান বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান হিসেবে প্রধান বিচারপতিদের সরিয়ে রাখার পক্ষে মত দেন আকবর আলি খান।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, “বড় রাজনৈতিক দলগুলো একমত না হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা অর্থবহ হবে না। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতা করে সংশোধন করা উচিত।”
৭ মার্চের ভাষণ ও বিচারবহির্ভূত হ ত্যা
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতা সংগ্রামের দলিল হিসেবে সংবিধানে সংযুক্ত করার সুপারিশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক।
অন্যদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধান সংবিধানে যোগ করার সুপারিশ করেন জাতীয় মানবাধিকর কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, “প্রচলিত আইনে বিচারের ব্যবস্থা থাকলেও তাতে কাজ হচ্ছে না। এ জন্যে সংবিধানের ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদে সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধানের বিষয়টি যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছি।”
Comments